নোবেল প্রাইজ আর তা চুরির ঘটনা জানেন তো? জেনে নিন এক্ষুনি
নোবেল প্রাইজ কে না পেতে চায়!
কিন্তু এ নোবেল প্রাইজ পেতে হতে আপনাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে নানা ধরনের আবিষ্কার করতে হবে সমাজের জন্যে ভালো কিছু করতে হবে!
আজকের ঘটনা টা সে নোবেল প্রাইজ নিয়েই, হ্যা বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের এমনই এক নোবেল প্রাইজ এর কথা বলবো তা হয়তো আগে জানতেন ও না!
আপনারা হয়ত জানেন যে নোবেল প্রাইজ হিসাবে অনেক টাকার সঙ্গে চকচকে সোনার মেডেল পান সবাই!সেই সোনার মেডেল তো তরল অবস্থায় দেওয়া হয় না আর সোনা তরল হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু মেডেল যদি চুরি হয়ে যায়!। আর সেই মেডেল যদি চোরেরা গলিয়ে তরল করে ফেলে! তারা তো এই মেডেল এর গলিত সোনা টা শুধু মাত্র সাধারণ সোনার দামেই বেচে দিবে,কে বা আর জানে এটা যে নোবেল এর মেডেল থেকে নেওয়া!!
বাংলায় প্রথম নোবেল পান আমাদের রবীদ্রনাথ ঠাকুর, তার নোবেল টা যে চুরি হয়েছিলো তা কে কে জানেন আমায় কমেন্ট বক্স এ অবশ্যই জানাবেন!!
রবি ঠাকুর এর নোবেল টা ২০০৪ সালে চুরি হয় শোনা যায় কোনো নিদর্শন শপ নাকি চুরি করিয়ে নিয়েছে!
তার নোবেল হারিয়ে যাওয়ার ১৬ বছর পরেও আজ অব্দি কেউ খুজে পায় নি! হয়ত তার নোবেল টা গলিয়ে ফেলা হয়েছিলো!,চোর কি আর নোবেল এর কদর জানে!!!!
.
কিন্তু নোবেল নিয়ে যে ইউরোপে নানান ঘটে ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, তা আজও যেমন হাস্যকর আবার ভয়কর ও বিজ্ঞানের ইতিহাসে।
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় ডেনিস বিজ্ঞানী নীলস বোরের হাতে দুটি নোবেল আসে। কিন্তু সেই নোবেল দুটি সুইডেনের নোবেল কমিটি বোরকে দেননি।বরং জানলে অবাক হবেন তিনি দুটি নোবেল আগেই পেয়েছিলেন।আর এই দুটি নোবেল আসে জার্মানি থেকে!!!
.
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ছিলো! তখন হিটলারের প্রচণ্ড রাগছিল ইহুদিদের ওপর। হিটলার বাহিনী যেখানেই ইহুদি পাচ্ছে ধরে ধরে মেরে ফেলছে। এমনকি তাদের দেশ জার্মানির বিজ্ঞানীরাও রেহাই দিচ্ছিলো না!
আলবারর্ট আইনস্টাইন ও ইহুদি ছিলেন। হিটলারের ভয়ে তিনি পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে।তখন যুদ্ধের মধ্য আটকা পড়েন দুই পদার্থবিজ্ঞানী ম্যাক্স ফন লু ও ম্যাক্স ফ্রাঙ্ক। তারা দুজনই নোবেল পেয়েছেন সেই সময়। আবার তারা দুজনই ইহুদি। তাদেরকে নোবেল দেওয়া হয় সুইডেন থেকে। তখন সুইডেন ছিল হিটলারের শত্রু দেশ। শত্রুদের কাছ থেকে তাঁর দেশের দুই ইহুদি বিজ্ঞানী নোবেল নিয়েছেন! হিটলার সেটা সহ্য করবেন না। লু আর ফ্রাঙ্ককে ধরার জন্য বের হয় নাৎসি বাহিনী। অন্যদিকে লু আর ফ্রাঙ্ক ভাবলেন, তারা ধরা পড়লে মরতে হবে আর তার সাথে সেই নোবেল প্রাইজটাও কেtড়ে নিবে হিটলারের সৈন্যরা। তাঁরা নিজেদের জীবন এর চেয়ে নোবেল নিয়েই বেশি চিন্তায় । তারা তখন একটা খামে ভরে মেডেল দুটো পাঠিয়ে দিলেন ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে।তাদেরই বন্ধু আরেক বিজ্জানী নীলস বোরের কাছে!!
.
বোর নোবেল এর মেডেল দুটো লুকিয়ে রাখেন। কিন্তু সে সময় নাৎসি বাহিনী ডেনমার্কেও হামলা করেছে। যেকোনো সময় বোরের গবেষণাগারেও হামলা চালাতে পারে। তখন তিনি মেডেল দুটো বাঁচানোর জন্যে চিন্তায় পড়লেন। বোর ভেবেছিলেন মেডেল দুটো মাটিতে পুঁতে ফেলবেন। কিন্তু হিটলার বাহিনীওরা ঠিক মাটি খুঁড়ে বের করে ফেলবে।তখন বোরের এক সহকারী ছিলেন হাঙ্গেরিয়ান রসায়নবিদ জর্জ হাভেসি! তিনি বোরকে বুদ্ধি দিলেন সোনাগুলো গলিয়ে তরল করে ফেলতে।কিন্তু সাধারণ কোনো তরলে সোনা গলে না। সোনা গলাতে লাগে অ্যাকোয়া রেজিয়া। এটি অনেক শক্তিশালী একটি অ্যাসিড!!
তখন বোর আর হাভাসি তখন মডেল দুটো অ্যাকোয়া রেজিয়ার ভেতর ফেলে গলিয়ে ফেললেন। সোনা আর অ্যাসিড মিশে তা হলুদ রঙের এক তরলে পরিণত হয়েছে। বোর সেই হলুদ তরল একটা বোতলে ভরে রেখে দেন তার আলমারিতে।
শেষমেষ তাদের চিন্তাই ঠিক হয়। হিটলারের নাৎসি বাহিনী চলে এলো ডেনমার্কেও। আক্রান্ত হলো রাজধানী ও তখন বোর আর তার বন্ধু হ্যাভাসি পালিয়ে গেলেন তাদের জীবন রক্ষায়।তখন তাদের ল্যাবরেটরি এককোণে বোতলে রাখা গলিত তরল গুলি পড়ে রইলো!!
শেষ পর্যন্ত তখন হিটলার হেরে যান যুদ্ধে।
বোর আর হাভেসি তাদের শহর কোপেনহেগেনে ফিরে আসে। তাঁদের ল্যাবরেটরি লন্ডভন্ড করে রেখে গেছে হিটলার সৈন্যরা। কিন্তু আলমারির কোণে সেই হলুদ তরলের বোতল এর কিছুই হয় নি! মাথামোাটা নাৎসি বাহিনী তো আর জানে না এই তরল গুলি কি!!
পরে নীলস বোরের ছেলে অ্যাগেই বোর!
অ্যাকোয়া রেজিয়া থেকে আবার সোনাগুলো বের করেন। নীলস বোর সেই সোনা পাঠিয়ে দেন সুইডেনের নোবেল কমিটির কাছে।
নোবেল কমিটি সেই সোনা নিয়ে আবার নতুন করে তৈরি করে নোবেল। হুবহু আগের মতো করে তৈরি সেই নোবেল পাঠিয়ে দেয় বোরের কাছে।আর বোর তা তার দুই বন্ধু লু আর ফ্রাঙ্কের কাছে পাঠিয়ে দেন!!
সূত্র: নোবেল প্রাইজ ডট অর্গ, ফিজিকস ওয়ার্ল্ড,বিজ্ঞানীদের গোপন জীবন!ইন্টারনেট
Comments
Post a Comment